
ফোরসাইড নিউজ ২৪: ঐক্যফ্রন্টের প্রধান ড. কামালের সতর্কবার্তা দেশের অবস্থা ভয়াবহতার দিকে মোড় নিতে পারে নির্বাচন নিয়ে সরকারের পক্ষপাতমূলক আচরণ ও টালবাহানার সমালোচনা করে ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ‘২০১৪ সাল থেকে সরকার নির্বাচন দিচ্ছি দিচ্ছি বলে পাঁচ বছর কাটিয়েছে। এই সরকারকে অভিনয়ের জন্য অস্কার দেয়া উচিত। কারণ তারা ‘এই দিচ্ছি এই দিচ্ছি’ অভিনয় করে পাঁচ বছর কাটিয়ে দিয়েছে।’
এ প্রসঙ্গে ড.কামাল বলেন, ‘২০১৪ সালে হওয়া নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে আদালতে আমাকে ডাকা হয়েছিল। সেখানে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য তারা ৫ জানুয়ারির নির্বাচন দিয়েছে। দ্রুত সব দলকে নিয়ে তারা আরেকটি নির্বাচন দেবে। কিন্তু সেই ‘দ্রুত’ শব্দটির অর্থ এতদিনেও বুঝতে পারলাম না। ‘দ্রুত’ শব্দটি ডিকশনারিতে নতুন করে ঢুকানো দরকার। দ্রুত শব্দ বলতে কত দ্রুত বোঝানো হয়- ৫ বছর?’
সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর পূর্বাণী হোটেলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহার ঘোষণা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
৫ জানুয়ারি নির্বাচন সম্পর্কে ড.কামাল বলেন, ‘২০১৪ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ রাষ্ট্রের মালিকানা হারিয়েছে। জনগণকে হাড়ে হাড়ে এর মাশুল দিতে হচ্ছে। এই বছরগুলোতে অর্থনীতি নানাভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া এই সরকারের আমলে সীমাহীন দুর্নীতি হয়েছে। হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি। ব্যাংকের কথাতো বলবোই না, তাহলে রাষ্ট্রের ওপর মানুষ আস্থা হারাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি সবসময় পুলিশকে নিয়ে গর্ব করেছি, পুলিশকে এই পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হবে কখনও ভাবিনি। সংলাপের শেষ দিনে আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে একটি আশ্বাস পেয়েছিলাম যে, আর কেউ অ্যারেস্ট হবে না। তবে এরপর থেকে শুধু অ্যারেস্ট, অ্যারেস্ট আর অ্যারেস্ট। অ্যারেস্ট কোনোভাবেই বন্ধ হচ্ছে না। তফসিল ঘোষণার পর থেকে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৯০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘গ্রেফতারকৃতদের নাম ও স্থানের তালিকা আমাদের কাছে রয়েছে। এটি একটি জাতীয় লজ্জার বিষয়। এটা শুনে আমাদের ১৬-১৭ কোটি মানুষ লজ্জা পাবে। যে স্বাধীনতার জন্য এতো মানুষ প্রাণ দিয়েছে, বঙ্গবন্ধু প্রাণ দিয়েছেন, সেই স্বাধীন দেশে ৪৭ বছর পরেও জনগণকে এইভাবে আক্রমণ করা হচ্ছে।’
প্রবীণ এই আইনজীবী বলেন, ‘আমি পুলিশ বাহিনীকে অনুরোধ করি, আবেদন করি, তাদের যেকোনোভাবে বোঝানোর চেষ্টা করি, এগুলো আপনারা করবেন না। পুলিশ একাডেমিতে বক্তব্যে আমি অনেকবার বলেছি এখনও বলছি, আপনারা কোনও বেআইনি হুকুম মানবেন না। বেআইনি আদেশ মানা অপরাধ। পুলিশ বাহিনীকে এলোপাথাড়ি গ্রেফতার করা থেকে সরে আসতে হবে, বিশেষ করে নির্বাচনের ১২-১৩ দিন আগে।’
ড.কামাল বলেন, ‘সরকারের উচিৎ জনগণ যেভাবে দেশে পরিবর্তন আনতে চায় সেভাবে হতে দেয়া। তা না হলে আমি সতর্ক করে দিতে চাই, দেশের অবস্থা ভয়াবহতার দিকে মোড় নিতে পারে। যা কারোরই কাম্য নয়।’
তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের মতো আমরাও বলতে চাই, এই রাষ্ট্রের মেরামত প্রয়োজন। আমি চাই ৩০ ডিসেম্বর আপনারা দলে দলে জনে জনে ভোটকেন্দ্রে যাবেন। ভোট দেবেন। অনিয়ম রুখবেন।’