
ফোরসাইড নিউজ২৪.কম :
বাতাসে ভাসছিল তার আগমনী বার্তা। ঝরে পড়ছে গাছের ধূসর পাতা। কচি পাতায় ঢেকে যাচ্ছে শাখা-প্রশাখা। তার ভেতর থেকেই আনমনে ডেকে চলছে কোকিল। ফুলের বাগানেও শুরু হয়েছে রঙের খেলা। রুক্ষ, হিমেল দিন পার করে প্রকৃতিতে ফুটে উঠেছে বর্ণিল, সুবাসিত এক ঋতু। কী নেই তার! রূপ, রস, লাবণ্য ছড়িয়ে পড়ছে মাতাল এক সমীরণে।
প্রকৃতির নিয়মে ‘দখিন সমীরণের শিহরণ’ জাগাতে সেই মাহেন্দ্র দিন অবশেষে এসেই গেল। জেগে উঠল বসন্ত। আজ বুধবার সেই পহেলা ফাল্গুন। ঋতুরাজ বসন্তের আগমনী দিন। অভিন্ন এক অনুভূতিতে আজ ভাসছে ভাটিবাংলা থেকে সারা বাংলা, ‘বসন্ত বাতাসে… সই গো/বসন্ত বাতাসে/বন্ধুর বাড়ির ফুলের গন্ধ আমার বাড়ি আসে।’ যে প্রাণখোলা বুনো আনন্দে একদিন দুলেছিলেন শাহ আবদুল করিম, সে আনন্দ আজ সবার। উদ্বেল, ব্যগ্র হৃদয়ের মন্দিরে আজ দুলে দুলে উঠছে এই কামনা, ‘মধুর বসন্ত এসেছে, আমাদের মধুর মিলন ঘটাতে…’।
আজ বুধবার প্রভাতের নবীন ঊষা বাংলার প্রকৃতিতে নিয়ে এসেছে ঋতুরাজের দোলা। খুলে গেছে দখিনা দুয়ার। মানব-মানবীর হৃদয়ের বেদি আর প্রজাপতির রঙিন পাখা, মৌমাছির গুনগুনানি, বৃক্ষ-লতা-গুল্ম, ফুলে-ফলে, পত্র-পল্লবে, শাখায় শাখায়, ঘাসে ঘাসে, নদীর কিনারে, কুঞ্জ-বীথিকা আর অরণ্য-পর্বতে নবযৌবনের বান ডেকেছে।
প্রকৃতির এই রূপতরঙ্গে দুলে ওঠে কবিগুরু গেয়ে ওঠেন- ‘ওরে ভাই, ফাগুন লেগেছে বনে বনে।’ গেয়ে ওঠেন- ‘ফাগুন, হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান/ তোমার, হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান/ আমার আপনহারা প্রাণ/আমার বাঁধনছেঁড়া প্রাণ’। আজও সেই সুর ধ্বনিত হচ্ছে প্রতি হৃদয়ে।
বসন্ত উদযাপন বসন্তকে স্বাগত জানাতে ‘এসো মিলি প্রাণের উৎসবে’ প্রতিপাদ্যে আজ রাজধানীর চারটি মঞ্চে বসন্ত উৎসবের আয়োজন করেছে জাতীয় বসন্ত উদ্যাপন পরিষদ। যার মূল আয়োজনটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলায়। এ ছাড়া লক্ষ্মীবাজারের বাহাদুর শাহ পার্ক, ধানমি লেকের রবীন্দ্রসরোবর ও উত্তরার ৭ নম্বর পার্কের মাঠে বসন্ত উৎসবের অনুষ্ঠান হবে।
বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের আয়োজনে গতকাল মঙ্গলবারই শুরু হয়েছে বসন্তকে স্বাগত জানানোর পালা।