
আসাদুল্লাহ আবু মুয়াজ
আসাদুল্লাহ আবু মুয়াজ : ইন্টারনেট প্রযুক্তি বর্তমানে মানুষের যাবতীয় চাহিদার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে । ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে নিয়ে একজন ব্যক্তি ক্যারিয়ার গড়ার স্বপ্ন দেখে সোশ্যাল মিডিয়াকে কেন্দ্র করে ।
আর এখানে স্বপ্নের বীজ বপন করতে হলে কিংবা এগিয়ে যেতে হলে অবশ্যই তাকে ফেমাস বা প্রসিদ্ধি লাভ করতে হবে ।
ফেমাস হওয়ার লক্ষ্যে অনেকে অনেক ধরনের প্রচেষ্টা করে থাকে । কেউ সফল হয় আবার কেউ হতাশও হয় ।
অপরদিকে কিছু মানুষ আছে যারা অটোমেটিক ভাইরাল হয়ে যায় । প্রচেষ্টা ছাড়াই তাদের অর্জিত হয় বিস্তর প্রসিদ্ধি । সদুপায়ে কিংবা অসদুপায়ে হোক ভাইরাল হওয়াটাই আজকের দিনে অনেক মূল্যবান বিষয় ।
তাই কাউকে ভাইরাল করে দেওয়া মানেই তাকে শেষ করে দেওয়া হয় না । কখনো কখনো ভাইরাল হওয়ার মাধ্যমে সেই ব্যক্তি হয়ে যায় অনাকাঙ্ক্ষিত হেরো ।
যাদের কাছে নীতি নৈতিকতার কোন মূল্য থাকে না তাদেরকে আপনি হাজারো গালি দিলেও এসবে তাদের কিচ্ছু আসে যায় না । উল্টো তাকে যখন আমরা সকলে মিলে ভাইরাল করে দিচ্ছি তখন সে হয়ে যাচ্ছে প্রযুক্তি জগতের সেলিব্রেটি ।
কিছু কিছু ব্যাপার থাকে যেগুলো মানুষ যত কম জানতে পারবে ততোই ভালো ।
যেমন কেউ যদি পরকালের অস্তিত্ব অস্বীকার করে কিংবা কেউ যদি আল্লাহকে, রাসূলকে, কোরআনকে অথবা ইসলামের অন্য কোন বড় নিদর্শনকে অপমান করে, লাঞ্ছিত করে তাহলে এসব ব্যাপার অন্যদের থেকে যত গোপন রাখা যায় ততই ভালো । কারণ পাঠকদের মধ্যে সবাই মুসলিম থাকে না । তাদের কাছে এসব বিষয়গুলো প্রচারের কারনে ইসলামই হাসির খোরাক হচ্ছে ।
অপরদিকে একজন মুমিন, যার মস্তিষ্ক এসব বিষয়গুলো থেকে মুক্ত ছিল । ভাইরালের মাধ্যমে কখনো কখনো তার মাঝেও চিন্তাগত পরিবর্তন চলে আসার আশঙ্কা থাকে ।
দেখুন চাপা কবির তার বক্তব্যের মাধ্যমে পরকাল বা ইসলাম বিষয়ে তার বিশ্বাস ফুঁটিয়ে তুলেছিল । এখানে তার একটি মেসেজ ছিল । “আমি যা দেখি না তা বিশ্বাস করি না” । মেসেজটা যে সম্পূর্ণ অযৌক্তিক এবং অবিবেচনাপ্রসূত এতে কোন সন্দেহ নেই । কিন্তু ভাইরালের মাধ্যমে এই মেসেজটাই লাখো কোটি মানুষের কানে পৌঁছে যাচ্ছে । সবাই কিন্তু ব্যাপারটাকে ইতিবাচক হিসেবে গ্রহণ করবে না । কারো কারো মস্তিষ্ক এটাকে নেতিবাচক ভাবেও গ্রহণ করতে পারে । যেটা কখনোই আমাদের ভাইরালের উদ্দেশ্য ছিল না ।
অপরদিকে সাফা কবিররা কোন পরিশ্রম ছাড়াই লাভ করছে বিশাল প্রসিদ্ধি !!
তাকে নিয়ে কয়েকটি বৈদেশিক ম্যাগাজিনেও নিউজ এসেছে । যেটা হয়তো তার জীবনে কখনোই সম্ভব হবে বলে সে কল্পনাও করেনি ।
এখন চলছে পুরনো বস্তা পঁচা নাস্তিক সেফুকে নিয়ে সমালোচনা । সে কিন্তু ইসলামকে নিয়ে ইতিপূর্বেও জঘন্যতম অশ্লীল মন্তব্য করেছিল । কিন্তু তা সত্ত্বেও আমরা তাকেই হিরোর আসনে বসিয়ে বিনোদন করছিলাম । আমরাই তাকে ভাইরাল করেছি । আমরাই তাকে হিরো বানিয়েছি । আমরাই তার অশ্লীল ভিডিওগুলো প্রচার প্রসার করেছি । এখন আবার আমরাই তার ইসলামবিদ্বেষী মূলক জঘন্যতম মন্তব্যগুলো ভাইরাল করে দিচ্ছি । অর্থাৎ এক কথায় ইসলাম বিদ্বেষের মেসেজ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিচ্ছি ।
আমাদের উচিত ছিল এসব নোংরা প্রকৃতির মানুষগুলোকে সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে চলা । যদি সম্ভব হয় ব্যক্তিগত উদ্যোগে তাদের ব্যাপারে আদালতে গিয়ে রিপোর্ট করা । কিন্তু কখনোই তাদেরকে ভাইরাল না করা ।
কারণ সব ভাইরাল ইতিবাচক ফলাফল দেয় না কিছু কিছু ভাইরাল চরমভাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে ।