
ব্যালন ডি’অর জিতলেন লুকা মদরিচ। এর মধ্যদিয়ে লিওনেল মেসি ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর এক দশকের রাজত্বের অবসান ঘটল। ফরাসি সাময়িকীর এ পুরস্কার এবার যে মদরিচের হাতেই উঠবে তা আগেই আঁচ করা গিয়েছিল। বিষয়টি বুঝতে পেরেছিলেন মেসি-রোনাল্ডোও। তাই প্যারিসে বর্ষসেরা পুরস্কার অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি এ দুই তারকাকে। মেসি-রোনাল্ডোর পর ফুটবলবিশ্বের বড় তারকা ধরা হয় নেইমারকে। কিন্তু একই শহরে থেকেও অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি নেইমারকে। ব্যালন ডি’অর না জিতলে অনুষ্ঠানে না যাওয়ার রীতি শুরু করেছেন মেসি-রোনাল্ডো। কয়েক বছর ধরে এরকম চলে আসছে। কিন্তু এই প্রথম ব্যালন ডি’অরের পুরস্কারের রাতে মেসি ও রোনাল্ডো। দু’জনই ছিলেন না। এবার তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন নেইমার। কারণও আছে। গত ১০ বছর ধরে মেসি কিংবা রোনাল্ডো পেয়েছেন এ পুরস্কার। ফলে একজন থাকতেন। এবার এ দু’জনের যৌথ রাজত্বের অবসান ঘটিয়ে বর্ষসেরা পুরস্কার জিতে নিলেন মদরিচ। অবশ্য অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কিলিয়ান এমবাপ্পে, আঁতোয়া গ্রিজমান, রাফায়েল ভারানে, বুফন ও ইডেন হ্যাজার্ডদের মতো তারকা ফুটবলাররা। এদিন সারা বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীদের চোখ ছিল প্যারিসে। ব্যালন ডি’অর বর্ষসেরা পুরস্কার অনুষ্ঠানে। সেসময় মেসি ফুটবল থেকে বহুদূর সন্তানদের নিয়ে কাটিয়েছেন আনন্দঘন সময়। দুই সন্তানকে নিয়ে কাটানো সেই সময়ের কিছু ছবি দিয়েছেন ইনস্টাগ্রামে। রোনাল্ডো কী করেছেন তা জানা যায়নি। কিন্তু তার বোন আলমা আভেইরা যেন আক্রোশ ঝেড়ে দিয়েছেন নিজের ইনস্টাগ্রামের এক পোস্টে। গত বছর ব্যালন ডি’অর জেতা রোনাল্ডোর একটি ছবি নিজের ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করে তার ক্যাপশনে বিপ্লবী এক বক্তব্য দিয়েছেন আভেইরা, ‘পচা, নষ্ট, ঘুণেধরা পৃথিবীতে বাস করছি আমরা, যেখানে মাফিয়া আর টাকার জোরে সবকিছু পাওয়া যায়!’ এদিকে প্যারিসে নেইমার ব্যস্ত ছিলেন ‘কল অব ডিউটি’ খেলা নিয়ে। তার টুইটার অ্যাকাউন্টে দেখা গেছে ব্রাজিলিয়ান এই সেনসেশন ব্যস্ত কম্পিউটার গেম নিয়ে। ‘জানি না আর কী করতে হবে’ ব্যালন ডি’অরের পুরস্কার মঞ্চে থাকতে পেরে গর্বিত ফ্রান্সের বিশ্বকাপজয়ী ফরোয়ার্ড আঁতোয়া গ্রিজমান। তবে বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিততে না পেরে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন এ বছর ক্লাব ও জাতীয় দলের হয়ে দারুণ সফল এই তারকা। সোমবার ফরাসি সাময়িকী ‘ফ্রান্স ফুটবল’-এর দেয়া পুরস্কারে বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকদের দেয়া ভোটে তৃতীয় হন গ্রিজমান। গত দু’বছরের বর্ষসেরা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো হন দ্বিতীয়। রিয়াল মাদ্রিদের ক্রোট মিডফিল্ডার লুকা মদরিচ প্রথমবারের মতো জেতেন ব্যালন ডি’অর ট্রফি। ২০১৮ সালে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের ইউরোপা লিগ ও উয়েফা সুপার কাপ জয়ে বড় অবদান ছিল গ্রিজমানের। রাশিয়ায় ফ্রান্সের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ জয়েও দারুণ ভূমিকা রাখেন ২৭ বছর বয়সী এই ফুটবলার। ব্যালন ডি’অর জিততে না পেরে নিজের হতাশা গোপন করেননি গ্রিজমান। ‘একজন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়ে পুরস্কারের মঞ্চে থাকাটা দারুণ গর্বের। ভবিষ্যতে লুকার জায়গায় থাকার জন্য আমার ক্লাব এবং জাতীয় দলের সতীর্থদের ওপর ভরসা করছি। আমি একটা ইউরোপা লিগ জিতলাম, একটা বিশ্বকাপও জিতলাম, আমাকে আর কী করতে হবে জানি না,’ বলেছেন গ্রিজমান। পুরস্কার জিততে না পেরে গ্রিজমানের মতো হতাশ নন ফ্রান্সের বিশ্বকাপজয়ী দলের আরেক ফরোয়ার্ড কিলিয়ান এমবাপ্পে। ভবিষ্যতে জিতবেন বলে আশাবাদী তিনি। ‘হতাশা? ভালো বলেছেন, যেখান থেকে আমি এসেছি, এটা কোনো সমস্যা নয়।’